২২ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঢাকা মোহামেডান ঘরোয়া ফুটবল লিগে আবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তিন দিন আগেই ক্লাব প্রাঙ্গণে হয়েছে সেই স্বপ্নজয়ের উদযাপন। এরই মাঝে এক অভাবনীয় ঘটনা—ক্লাবটির ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাপ মোহাম্মদ আলমগীর পদত্যাগ করেছেন।
আজ (৫ জুন) তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ক্লাব সভাপতি, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দুল মুবীন (অব)-এর কাছে। একইসঙ্গে একটি অনুলিপি পাঠিয়েছেন ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ কাজী ফিরোজ রশীদের কাছেও। এমন এক সময় পদত্যাগ, যখন পুরো ক্লাব জুড়ে চলছে উৎসবের আমেজ।
মোহামেডানের ফুটবল পুনর্জাগরণে আলমগীরের অবদান অনস্বীকার্য। ২০২৩ সালে ক্লাবের ফেডারেশন কাপ জয়ে তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। এরপরের মৌসুমে টানা তিনটি আসরে রানার্সআপ এবং এবারের ঐতিহাসিক লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ—সবকিছুর পেছনে ছিল তার আর্থিক সহায়তা ও পরিচালনাগত দূরদৃষ্টি।
তবে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেও ক্লাব পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থাকছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, আগামীতেও ক্লাবের প্রয়োজনে যেমনটা অতীতে পাশে থেকেছেন, তেমনটাই থাকবেন।
তার চিঠিতে উঠে এসেছে ক্লাবের কাঠামোগত কিছু জটিলতা নিয়েও। তিনি জানান, ২০২১ সালের মার্চে নির্বাচিত বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ দুই বছর হলেও, তা এখন চার বছরে গড়িয়েছে—যা গঠনতন্ত্রের লঙ্ঘন। তাই দ্রুত বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে নতুন ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মনোনয়নের অনুরোধও করেন।
যদিও চিঠিতে লেখা হয়েছে, তার পদত্যাগে কোনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না, বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। তার সরে যাওয়া দল গঠনের মৌসুমে মোহামেডানের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। ইতোমধ্যে অন্যান্য ক্লাবগুলো খেলোয়াড় বাছাইয়ে নেমে পড়েছে। মোহামেডান যদি এই রেসে পিছিয়ে পড়ে, তবে শিরোপা ধরে রাখাও কঠিন হবে।
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে মোহামেডানে। ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান প্রায় দেড় বছর আগে পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, যদিও তা গৃহীত হয়নি। পরে তিনি ফের সক্রিয় ভূমিকায় ফিরে আসেন। এবার ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে কি না—তা সময়ই বলে দেবে। তবে একথা নিশ্চিত, এই সিদ্ধান্তে মোহামেডান ফুটবলে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।